Wednesday, October 11, 2017

বুড়ো বয়েসে ভীমরতি


বুড়ো বয়েসে ভীমরতি

শ্যামল সোম

আজ সকালে ঝোলার ভর্তি কবিতার পান্ডুলিপি নিয়ে
কলেজ  স্ট্রীট এর বর্ণ পরিচয় নামে বিশাল মলে সারি
সারি পুস্তক প্রকাশনী জনৈকা জননীর সাহায্যে এক
প্রকাশকের দরবারে হাজির, নমস্কার করে ভয়ে ভয়ে
অধমের নাম শুনেই  একগাল হেসে জননীর সন্মানে
বসতে বললেন, হাঁ হাঁ উনি সনামধন্যা লেখিকা আপনার
নাম সুপারিশ করেছেন, তা কৈ দেখি লেখা !
কম্পিত হাতে তুলে দিলাম  এক আকাশ মেঘের মতন
আমার আদরের কবিতা যিনি জননী মতন শৈশবে
কৈশোরের ভগ্নী বা খেলার সাথী  যৌবনে প্রারম্ভিক প্রেম
প্রেমিকা এখন বাদ্ধকে কন্যা বা নাতনী আশৈশব সঙ্গিনী
আমার নিজের কাছে আদরের কবিতাগুলো কতশত বিনিদ্র
রাতের ঘুম নষ্ট করে রাতদিন লিখে চলছি  এ যেন গঙ্গা পদ্মা
স্রোত সুপ্ত কান্না তীব্র বাসনা মরার আগে ছাপা অক্ষরে দেখবো
আমার প্রথম প্রেম স্বপ্নের কাব্য সমগ্র থেকে যাবে গ্রন্থ  হয়তো
শেষে দেখা যাবে কলেজ স্ট্রিটের ফুটপাতে পুরোনো বইয়ের
দোকানে দড়িতে ঝুলতে এই  অমর কাব্য গ্রন্থ " কবিতার সহবাস! "
প্রকাশক মহাশয়া ভয়ংকর রকম ক্ষেপে গেলেন ছিঁড়ছেন
দাঁতে দাঁত চেপে নারী সেই বাঘিনী অট্টহাস্য মা ছিন্নমস্তা
সুন্দরী প্রকাশক ঐ  ভীষণ আক্রমণে বিপন্ন সন্ত্রস্ত জননী বলে
চরণ তলে হুমকি মধ্যেই হামলে পড়ে কবিতা গুলি ফুলের
মতন ওনার হাত থেকে বাঁচালাম, তখন দেবী গর্জন করছেন
" ছাইপাশ  আবোলতাবোল এই সব কবিতা আস্তাকুড়  ফেলুন।"
গলা শুকিয়ে গেছে পা
শের এক ভদ্রলোক বললেন " দিদিভাই
উনি তো নিজের টাকাতে ছাপাবেন! " সায় দিয়ে বলি "নিশ্চয়ই
ঐ মানে আমার দীর্ঘদিনের বহুবছর এর স্বপ্ন  যদি- -?
মুখের কথা মুখেই রইল।
উনি হুংকার দিলেন, আমার প্রকাশনীর বাংলা  ভাষা সাহিত্যের
প্রতি সম্মান দায় বাধ্যতা দায়িত্ব  আছে মান্না বাবু পাগল ছাগল
জরাজীর্ণ বৃদ্ধ ক্ষেপেছেন,  উনি কাব্য গ্রন্থ প্রকাশ করে কবি হবেন,
এই সেই কাকের ময়ূর সাজার বাসনা।"
" হবে হবে ছাপা যাবে অন্য প্রকাশনীর নামে তবে মেসো মশাই
এই গুলো শুদ্ধ কাব্য অলংকরণ চিত্রকল্প ছন্দের বিমূর্ত বিন্যাস
নেই নেই নান্দনিক কাব্যিক ভাব ভাবের অভাব  এগুলো অনু গল্প
করে দিন পাঠক খাবে " আপনার টাকা দু দশখানা বিক্রী করার
দায়িত্ব  আপনার! ভেবে জানাবেন  "
সেইসব ভাবনার উদ্রেক ফসল  এই গ্রন্থের নাম " কবিতার সহবাসে গল্পের ভ্রূণ "!
ধন্যবাদ  আপনাদের জানাই অভিনন্দন শুভ রাত্রি যাপন সুখের স্বপন।

Wednesday, May 17, 2017

Love is not war
Has not barrier.
Love is divine
Would be fine.
Love you dear
I live toofar.
Dark eyes
Drag Me to you
Yes I love
To Be Loved.

Monday, May 30, 2016

গল্পপাঠ: মোস্তাক আহমাদ দীন'এর প্রবন্ধ : দেশভাগ, দেশ ভাগ নয়

গল্পপাঠ: মোস্তাক আহমাদ দীন'এর প্রবন্ধ : দেশভাগ, দেশ ভাগ নয়



  1. 1905 বঙ্গভঙ্গ আইন ইংরেজ হিন্দু মুসলমানদের যৌথ আন্দোলনের মাথার উপরে রবীন্দ্রনাথের ঋষি তুল্য নেতৃত্বে ফিরিয়ে নিলেন বঙ্গভঙ্গ আইন, ইতিহাসের পরিহাস মুষ্টিমেয় শক্তিশালী চতুর শয়তান প্রকৃতির ক্ষমতা লোভী মানুষ জনগন সেই আবহমান কালের জুলিয়াস সিজার নাটকের জনতা নির্বোধ উন্মাদ অশিক্ষিত গোঁয়ার সুযোগ সন্ধানী হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়ের সামাজিক অবক্ষয়ে ক্ষয়িষ্ণু চৈতন্য হীন উত্তেজিত করার সহজ উপায় ধর্মের ধ্বজাধারী দের অর্থের বিনিময়ে বা উসকে দিয়ে খুন ধর্ষণ, আগুনে ঘর বাড়ি গোয়াল পুড়িয়ে মারার দাউ দাউ করে জ্বলছে ঘরের চালা,

    শিশু কোলে জননী মৃত্যু পুত্রের ধর্ষণ করছে বাপের সামনে মেয়েকে স্বামীকে খুন হত্যা করছে পরস্পরকে দুই সম্প্রদায় মানুষ অথচ আশ্চর্য ব্যাপার মাত্র এই বাঙালী মুসলমানের পূর্ব পুরুষেরা সকলেই একসময়ে হিন্দু ধর্ম জাতিভেদ প্রথার শিকার অত্যাচারিত নিষ্ঠুর অপমানিত হতদরিদ্র অশিক্ষিত শেষে নবাবের ধর্মে ধর্মান্তরিত

    ইসলাম ধর্ম কবুল করে খেয়ে পড়ে বেঁচে শুধু বিবি নিয়ে পোলাপাইন গুলারে পান্তা ভাত

    আর কাফের জমীন শত্রু ঐ হিন্দু যারা দীর্ঘ বহু বছর ধরে শোষণ করে এসেছেন এমন কি জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষার জন্য খাজনা আদায় করতে ঘুরছেন, আশ্চর্য লিখন ক্ষমতা জমিদারের কঠোরতা আবার সোনার তরী আর বহু ছোট গল্প উপন্যাসের খরা বা কাব্য চর্চায় সাহিত্যে শাশ্বত লেখায় ব্যস্ত হয়ে রয়েছেন।

    ইতিহাসের ধারাবাহিকতার স্খলন রক্তক্ষরণ আজও এই ভারতবর্ষে পাকিস্তানে, ও বাংলাদেশে মুসলমান বাঙালী জাতির দেশ, বাঙালি আত্মঘাতি পরিহাস ছলে বলা হয়ে থাকে ভাতৃঘাতি দাঙ্গায় লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহারা শরনার্থী বহু জননী কন্যা গৃহ বধুঁ ধর্ষিতা বা দু নম্বর বিবি, কেউ বেশ্যা বহু ভিখারী হয়ে গেল ধর্মের নামে রাজনীতি গদি লড়াইয়ে ভাগ হয়ে গিয়েছিল অখন্ড ভারতবর্ষ সে পাপের শাস্তি ও মাতৃভুমির অভিশাপে বহু যুগ যুগান্তর ধরে বহু করে যেতে হবে বংশানুকরমে।

    পূনঃশচ ---:

    1946 16th,Direct Action Day Communal Riot কংগ্রেসের তরফে

    মুসলমানদের নিজস্ব পরিচিতি মানতে অস্বীকার তাই সোনার পাথরবাটি মিত্র

    শত্রুদের মোকাবিলা না করে ধর্ম নিরপেক্ষ ভারতবর্ষ অথচ এই ধর্মের নামে সত্তর বছর প্রায় বহু রকরক্ত পাত, হত্যারবদলে হত্যা চলমান  আজও --!

Saturday, April 23, 2016

যৌথ লিখন ---: বাঁশিওয়ালা  ও মায়াবতী


বাঁশিওয়ালা ---:

জানো, মায়াবতী, ভোরে উঠে দেখি
জানালার বাইরে আলো
আঁধারে, হালকা কুয়াশায়
আর আলোয় আলোক লতা,
মায়াবী চোখে, মুখে মৃদু হাসি
দাঁড়িয়ে আছো তুমি !
পেছনে শীতলক্ষা নদী
কল কল করে বহে যাচ্ছে।
কিন্তু  কি করে তা সম্ভব ?
না! আমি স্বপ্ন  দেখছিলাম।

মায়াবতী ---:

আমাকে তোমার হাত ছূঁয়ে বলতে
হবে, " দেখতে মিথ্যে ছিল সে স্বপ্ন ?
হাঁ, ভোরের কুয়াশার আড়াল হতে
ধীরে ধীরে নুপুর পড়া পায়ে আলতো
হেঁটে হেঁটে পৌঁছে ছিলাম ঐ  খোলা
জানালায় দাঁড়িয়ে দেখেছি তোমাকে,
হাঁ  বাঁশিওয়ালা!  সত্যি ছিলাম আমি।

বাঁশিওয়ালা ---:

অবিশ্বাস্য মনে হয় কোন
স্বপ্নের  উদ্যানে মায়াবী
ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
সূর্য  উদ্ভাসিত হয়ে উঠছে
শীতলক্ষা নদীর  ওপারে।
রাঙা আলো এসে পড়ছে
তোমার স্নিগ্ধ মুখে, ঐ অনন্য
অপলক দৃষ্টির তাকিয়ে আছো,
তির তির করে কাঁপছে চোখের
পাতা, চোখের মণিতে ভাসছে
ও কে ? বিহ্বল বিমোহিত  আমি ?

Tuesday, January 5, 2016

Friday, June 19, 2015

গল্পপাঠ: গল্পপাঠ।। আষাঢ় ১৪২২।। সংখ্যা।। ৩১ প্রয়াস --গল্প হলেও সত্যি

গল্পপাঠ: গল্পপাঠ।। আষাঢ় ১৪২২।। সংখ্যা।। ৩১







প্রয়াস



শ্যামল সোম



সেদিন খুব জোরে বহিছিল বাতাস, ঝড় উঠেছে, মেঘের ঘন ঘন ডাক - ব্রজ নিনাদ, হঠাৎ  আকাশ থেকে ঝাঁপিয়ে নামলো অঝোরে বৃষ্টি।

নার্সিংহোমে কেবিনে শুয়ে অসহ্য প্রসব বেদনায়  প্রসূতি রমা যন্ত্রণায় নীল হয়ে যাচ্ছে, ডাকা ডাকি করতে,সবাই এসে হাজির, রমা কে  চলমান শয্যা- বহন, চললো নিয়ে,  সাথে নার্স ছুটে গেল অপারেশন থিয়েটারে।



তারপর দীর্ঘ বছরের পর বছর রমা ও তাঁর পরম বন্ধুর মতো স্বামী সৌমেন এক সাথে দুজনে সমাজে সংসারে বহু লোকের, তীব্র ভৎসনা, লোক নিন্দা - বিদ্রুপ, বিদ্বেষ, কোর্ট কাছারি,  ভয়ঙ্কর ভাবে উৎপীড়ন, প্রাণনাশের হুমকি, সমস্ত নীরবে দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে যেতে হয়েছিলো।



ঐ বিশেষ   সম্প্রদায়  বাড়ি ঘেড়াও  করে বহুদিন অত্যাচার করে,  শেষে মোটা অংকের টাকা খেসারত দিয়ে রেহাই পাওয়া গেলো।

স্কুলে ভর্তির ব্যাপারে অনেক সাহায্য করেছিলেন শিশু ও নারী কল্যাণ সমিতির সদস্য থেকে শুরু করে চেয়ার পারসন মিসেস পল্লবী সেনগুপ্তা, উনি শ্রীজনীকে নিজের মেয়ের চেয়ে ও বেশী ভালোবাসেন।



রমা তার এক মাত্র সন্তানকে এই প্রিয় নাড়ী ছেঁড়া ধন, কেউ চেয়েছিলেন,  ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলতে। কেউ পরামর্শ দিয়েছিলেন ঐ  ওদের কাছে তুলে দিতে।



কিন্তু ! না ! মাতৃ হৃদয়ের হাহাকার সুগভীর মাতৃস্নেহ,  সন্তানের প্রতি  মায়া আর প্রবল ইচ্ছাশক্তি ওদের ঈশ্বর ভক্তি  সৌমেন সৌহার্দ বন্ধুত্ব পূর্ণ সমর্থন সাহস রমাকে প্রতি নিয়ত অনুপ্রেরণা জুগিয়ে এসেছে।

ওদের দাম্পত্য জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস,  শ্রদ্ধা,  অনুকম্পা,  সহানুভূতি,  প্রেম ভালবাসা  দীর্ঘ পঁচিশ বছরের আত্মীয় স্বজনদের কাছ  থেকে সামাজিকতা থেকে দূরে থেকে অনেক অনেক সংঘর্ষে সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে--

আজ তাদের একমাত্র সন্তান আজ মাথা উঁচিয়ে অসম্ভব তীক্ষ্ণ মেধা সম্পন্ন মেধাবী ছাত্রী  ঐ আত্মজাকে যখন দেখে দুচোখ জুড়িয়ে যায়,  ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানায় ওর যেন মঙ্গল হয়।

সার্থক ভাবে পরিপূর্ণ লক্ষণ পরিস্ফুট, হওয়ার জন্যই ঐ বিখ্যাত  মুম্বাই হাসপাতালের ডাক্তার সাকশেনের স্মরণাপর্ণ হয়েছিলেন, তিনি অকুণ্ঠ সহযোগিতা করেছিলেন।

তাঁর কাছে রমা  ও সৌমেন দুজনে কৃতজ্ঞ। আজ সম্পূর্ণ ভাবে নারীর অহংকারে - মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়েছেন ডাঃ সাকশেনা তিনি অতি যত্ন সহকারে কৃতিত্বের সঙ্গে  বিভিন্ন অপারেশন মধ্যে দিয়ে এক সার্থক মানুষ হিসাবে এই পৃথিবীতে সুপ্রতিষ্ঠিত করে সকলের প্রশংসনীয় হয়েছেন।

রমার  ফুলের মতো সন্তান শ্রীজনী  সমাজে অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায় মধ্যে লড়াই করে বড়  হওয়ার জন্য স্কুল জীবন থেকেই সমস্ত পরীক্ষা অসামান্য রেজাল্ট করে বিভিন্ন পদক ও প্রশংসা  পেয়ে এসেছে, কারণ এটা ছিলো জীবনের বিশাল চ্যালেঞ্জ। সে অসাধারণ পরিশ্রম করে বহু চেষ্টা করে নানা প্রতিযোগতায় সাফল্যের সাথে সফল হয়ে আজ একটি স্বনামধন্য কলেজে  লেকচারার হয়ে জয়েন করেছে।

বাড়ি ফিরে আনন্দে বাবা ও মাকে প্রণাম করতে যেতেই রমা আর সৌমেন দুজনে তাদের বহু কাঙ্খিত আদরের সন্তানকে জড়িয়ে কাঁদছে-- এক সাথে তিন জন আজ তিনজনের জন্যই পরস্পরকে অকুল, সুখের কান্নায় ভেঙে পড়ছে ।



লালনের গান ভেসে আসছে, " সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে !"